তৈমুর খানের কবিতা
চিহ্ন
একটা খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে আছেবিকেল এসে বসেছে মাথায়
সেদিকেই চেয়ে আছি আমি
ক্রুশবিদ্ধ যিশু
অদৃশ্য ছায়ার ক্রুশকাঠে বধ্যভূমিতে
আটকে আছি
নন্দিনীদের কাজললতা চোখে
একফোঁটা অশ্রু নেই
করুণার বাক্স ফাঁকা
সহানুভূতির বাক্যে কোনও বই
লেখা হয়নি আজও
বিকেল নেমেছে
রাত্রির নরম মাংসের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে
রোদের শৃগাল
আমার রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে
আর এক একটা চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে সভ্যতার
যুদ্ধ জয় করতে পারি নাকো
ঘর-উঠোনে মা-বাবার দীর্ঘশ্বাসচলাফেরা করে
আমাকে দেখে যায়
যুদ্ধ করতে পারি নাকো আর
তবু যুদ্ধক্ষেত্রেই থাকি
আমার হাতে এখনও চকচক করে
বাবার তলোয়ার
তলোয়ার আসলে এক সহিষ্ণু বিস্ময়
সংকটের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করা
অথবা আকাশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
যত ইচ্ছা নিজেকে প্রসারিত করা
দুয়ারে ঝাঁটা হাতে মায়ের সকাল
নিহত বসন্তকালে নিশ্চুপ কোকিল
এখনও অমৃতের সন্ধান করে
আমি ঝড় , দুর্বার সংযোগে
বেরিয়ে পড়ি প্রতিটি সকালে
ফিরে আসব বলে যাই বাবা ও মাকে...
ঘোড়া ছুটতে থাকে
এক একটি তলোয়ার হাতে বাহির হইযদিও ধারণা মাত্র সবকিছু —
একটি তেজি ঘোড়ার পিঠে মনকে বসিয়ে দিই
মন বসে থাকে
আমি ঘোড়ার লাগাম ধরি না
কোন যুগ ? কোন সভ্যতা ?
কোনও কৌতূহল নেই
জয়ের উল্লাস আমাকে ডাকে
ইতিহাস থেকে আর এক ইতিহাসের দিকে যেতে থাকি
ঘন সবুজ মেঘে রক্ত গড়িয়ে আসে
এক একটি উন্মাদ লাশ ভেসে যায়
তলোয়ার হাসতে থাকে সভ্যতার রোদে
সব ক্ষীণ রাস্তায় মানুষের ভিড়
লক্ষ্যভ্রষ্ট ধর্মচিহ্নে কাতর প্রশ্রয়
তির্যক লতানো শরীরে
দুইহাত তুলে নক্ষত্রের চুম্বন চায়
নক্ষত্ররা আদিম যুগের নারী
ঘোড়া ছুটতে থাকে অক্লান্ত ভ্রমের ভেতর দিয়ে
তার কোনও সত্য নেই , বিরতি নেই
দুর্বিনীত স্পর্ধায় আস্ফালন শুধু ....
------x-------
অনবদ্য সৃষ্টি
উত্তরমুছুনঅনবদ্য রচনা। কবির কবিতার গভীরতায় হারালাম নিজেকে ।
উত্তরমুছুন