সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডঃ সুজাতা ঘোষ



সংজ্ঞাহীন

এক একটা রাত – এক একটা ছোট ছোট গল্প
ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের টুকরো নীল নীল বিছানায়
জড়ো হয়ে পড়েছে আর লেপটে যাচ্ছে।
একটা একটা করে টুকরো গল্প তুলে গালে লাগালাম –
কত যুগ? কত কত যুগ ধরে আমি ভেসে বেড়াচ্ছি
সীমাহীন – সংজ্ঞাহীন – দীশাহীন – লক্ষ্যহীন –
অনুভূতিহীন হয়ে?
একটা ঝটকা লাগল, অনুভূতি! সত্যিই কি আমাদের
কোন অনুভুতি থাকে না?
গভীর, আরও গভীর, অনেক গভীর সমুদ্রের নীচের
রঙিন ম্যাচগুলো যেমন করে নীল, কমলা, লাল
পাতার সঙ্গে ঘসা খেয়ে চলে যাওয়ার সময়
উত্তপ্ত হয়ে শীরশীর করে ওঠে, তেমনই
একটা বোধ হয়! একেই তো অনুভুতি বলে
বলে জানি।
গভীর ভিতর থেকে কেঁপে ওঠা শরীরটা এখন
আর তেমন করে কিছু অনুভব করতে পারে না ঠিকই,
তবে, এখনো কেমন যেন হয়!
আরও অনেকটা অনেকটা পথ এভাবেই ভেসে
বেড়াতে হবে, আমরা সংজ্ঞাহীন, আমিও।
এগিয়ে চলেছি, ভেসে চলেছি, চোখ দুটো তাকিয়ে
আছে দূরে অনেক দূরে বহুদূরের ভেসে আসা
সমস্ত রং আর অরংয়ের দিকে –
আমার উপস্থিতি বুঝতে পারে না তারা,
দেখতে পায় না – অনুভব করতে পারে না,
অনুভব করতে পারে না আমায়,
সেদিন – ভোঁর চারটে হবে –
হঠাৎ দেখি, দুটো তিমি গভীর সুখ প্রেমে আল্পুত
হয়ে এক শরীরের রূপ নিয়ে ভেসে বেরাচ্ছে
নুড়ি পাথরের উপর দিয়ে।
তখনও শিরশির করে উথেছিল আমার এই –
এই শরীরটা ।
এই তো গত বছর পূজর সময় বাড়ি ফিরছি –
ওমা, রাস্তার মধ্যিখানে সমস্ত মানুষের গলার
জল শুকিয়ে মাথার ঘাম ছুটিয়ে তেনারা
দুজনে দিব্যি লেজের মাথায় ভর দিয়ে সোজা
আকাশ ধারার ভান করে দীর্ঘ চুম্বনে মত্ত হয়ে আছেন।

আমি এখনো বেশ অনেকটা কাছ থেকে ওদের
ভালোলাগাকে অনুভব করতে লাগলাম।
অনুভব করল আমার এই শরীরটাও।
আমরা সংজ্ঞাহীন – আমি ও।
আবার ভেসে বেড়াচ্ছি, একরাশ ভালোবাসা নিয়ে,
আমি সংজ্ঞাহীন – আমি সংজ্ঞাহীন ।।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বাংলা সাহিত্য : জনপ্রিয় কবিতাগুলো পড়ুন

শুভাগত রায়

audio testing  শুনুন কবি-কন্ঠে কবিতা পাঠ : সুসং দুর্গাপুর রোদ এসে পড়ে সোনা ধানখেতে সারি সারি কত আম কাঁঠালের গাছ সোনালী রোদ মাখে নদীর জল আদুরে জল স্ফটিক স্বচ্ছ কাঁচ।

প্রভাত চৌধুরীর দুটি কবিতা

১. বালিশ বালিশ দু-রকমের, একটা মাথার, অন্যটি কোলের কোলেরটিকে কেউ কেউ পাশের বলে থাকে তবে দু-ধরণের বালিশ-ই কিন্তু শিমুলতুলো নির্মিত মাথার বালিশের চারটি কোণ আছে কোণ চারটি ৯০ডিগ্রি অর্থাৎ একসমকোণ এর থেকে একটি কথা-ই প্রমাণিত হয় : প্রতিটি সমকোণ-ই ব্যবহার করে একই স্টাইলের টুপি স্টাইল এক হলেও কিন্তু রং আলাদা আলাদা সেসব রং-কথা এখন থাক এখন অপেক্ষা করি ছাতার জন্য বালিশও অপেক্ষা করুক ছাতার জন্য সামনে বর্ষাকাল আরও কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এখানে ২. চাদর বিছানার জন্য বেড-শিট এবং বেড-কভার দু-প্রকার চাদরের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে এদের মধ্যে বেড-কভার কিছুটা মোটা এবং বড়ও আর নরম, কিছুটা মাখনের মতো বেড-শিট এর জন্য় দু-জনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই দুজনেরই নিজ্স্ব আইডি আছে আই প্যাড আছে আছে ময়ুরপালক

শুভজিৎ দাসের কবিতা : নগরায়ণ

নগরায়ণ শুভজিৎ দাস শুভজিৎ দাসের কবিতা : নগরায়ণ বেদনা তৃপ্ত ধূসর কলিজায় রাঙামাটির অল্প ছোঁয়া নবীন প্রেমিক, অবুঝ মন চায়না আমি এই স্নিগ্ধ মায়া , আমি হারাতে চাই সুদূর এক গাঁয়ে যেখানে থাকবে শুধু চন্দনের ঘ্রাণ,কদমের পাপড়ি বুনো ছাতিমের শীতল ছায়া।। যেখানে অম্রমুকুল ,বকুল-কুসুম ভরিয়ে রাখে মাটির কোল সাঁঝের আকাশে জোনাকি পোকা নিস্তব্ধে করে শোরগোল, নগরায়নের ঔষধ খেতে চায়না আর এই কোমল শরীর কারখানার তিমিরাচ্ছন্ন ধোঁয়া বিদীর্ণ করেছে হৃৎকোমল । কাঠবেড়ালি যেখানে সপেদা গাছে চোখ ঘুরিয়ে দেখায় ভয় সারস যেখানে দীঘির মাঝে মাছ ধরার অপেক্ষায় রয় , নগরায়নের ধূসর ধোঁয়ায় যে বিবর্ণ হয়েছে হৃদয় খানি আজ সবুজের এই প্রলেপ লাগিয়ে করবো তার প্রাণময় । পিপীলিকার শুকনো বাসায় চড়ুই পাখি ডাক দিয়ে যায় মহুল ফুলের মাদক গন্ধ পূবালী হাওয়ায় নাক দিয়ে যায় আকাঙ্খা যেখানে গগনস্পর্শী অবকাশ নেই বাক্সে ভরা রোজ সাঁঝেতে ফ্যাকাশে চাঁদ বাঁশের কঞ্চির ফাঁক দিয়ে যায়। নিস্তব্ধতার মধুর কন্ঠে যেখানে উদাসীনতা হারায় গান গোধূলি আকাশে উড়তে থাকে লাল চন্দনের মিষ্টি ঘ্রাণ, নগর থেকে বহুদূরে সাধ করে মন ...